শুক্রবার, ১৩ মে, ২০১১

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ : বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সরকার ব্যর্থ : মাহমুদুর রহমানের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ : বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সরকার ব্যর্থ : মাহমুদুর রহমানের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে
বশীর আহমেদ
বর্তমান সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। র্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা অযৌক্তিকভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আটক করছে। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর চালানো হয়েছে নির্মম নির্যাতন। বাংলাদেশে নারীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ নানা ধরনের সহিংসতা চলছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
গতকাল লন্ডনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ‘দি স্টেট অব দি ওয়ার্ল্ডস হিউম্যান রাইটস’ শীর্ষক এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
রিপোর্টে এশিয়া প্যাসিফিক চ্যাপ্টারে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে বলা হয়, সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী ২০১০ সালের প্রথম ১০ মাসে র্যাব এবং পুলিশের হাতে ৬০ জনেরও বেশি মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যার উদাহরণ দিয়ে রিপোর্টে বলা হয়, গত জুলাই মাসে কুষ্টিয়া জেলার কোনাবাড়িয়া গ্রামের আবদুল আলীমকে পুলিশ সবার সামনে আটক করে। পরের দিন সকালে তার গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ দাবি করে আবদুল আলীমকে গ্রেফতার করতে গেলে সে প্রতিরোধ করে এবং নিহত হয়। আলীমের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সুবিচার পাওয়া যায়নি।
বন্দি নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গত বছর ২ জুন আটক করা হয় এই অভিযোগ এনে যে, তিনি বৈধ লাইসেন্স ছাড়া পত্রিকা চালাচ্ছেন। আটক অবস্থায় মাহমুদুর রহমানকে পুলিশ নির্মমভাবে প্রহার করেছে। মাহমুদুর রহমান আদালতে তার ওপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
রিপোর্টে বলা হয়, আটক অবস্থায় নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনে গত বছর অন্তত ৬ জন মারা গেছে। এসব ঘটনা নিয়ে পুলিশি তদন্ত হলেও এখন পর্যন্ত দায়ীদের কাউকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। আটক অবস্থায় গর্ভবতী গার্মেন্ট শ্রমিকরাও নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পায়নি বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়, র্যাব এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর বেপরোয়া শক্তি প্রয়োগ করছে। তারা বিএনপি নেতা এবং সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাসের বাড়িতে হরতালের আগের রাতে হামলা চালায়। ওই হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল নারী।
অযৌক্তিকভাবে গ্রেফতার এবং ডিটেনশনের কথা উল্লেখ করে অ্যামনেস্টির রিপোর্টে বলা হয়, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকালে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে নির্বিচারে আটক করে। ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল এবং বিভিন্ন সমাবেশ থেকে তাদের আটক করা হয়। এদের অনেকের বিরুদ্ধে আনা হয় ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাঝে ছাত্রশিবিরের অন্তত ৩০০ সদস্যকে আটক করা হয়। জুন মাসে বিএনপির ২০ নেতাসহ আটক করা হয় ২০০ জনকে।
যুদ্ধপরাধের বিচার প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারের জন্য বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে। সরকার বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মো. কামারুজ্জামান এবং আবদুল কাদের মোল্লাকে গ্রেফতার করে তাদের এখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত বলে দেখানো হচ্ছে। তবে তাদের গ্রেফতার করা হয় অন্য অভিযোগে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারের জন্য যুদ্ধাপরাধ বিচার আইন ১৯৭৩ গত ২০০৯ সালে সংশোধন করা হয়েছে। বিদ্যমান এই আইনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি রয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে রিপোর্টে বল হয়, নারীর প্রতি সহিংসতার ৭ হাজার ২৮৫টি অভিযোগ পুলিশের কাছে এসেছে ২০১০ সালের প্রথম ৬ মাসে। এর মধ্যে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল ১ হাজার ৫৮৬টি।

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১১

ফেসবুকের ব্যাকআপ রাখুন

হেল্পলাইন
ফেসবুকের ব্যাকআপ রাখুন
আজকাল প্রায়ই ই-মেইল আইডি, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বেদখল (হ্যাকড) হওয়া কথা শোনা যায়। হয়তো অনেক দিন ধরে ফেসবুক ব্যবহার করেন। ফেসবুকে আপনার দরকারি ছবি, তথ্য এবং অনেক বন্ধু আছে। কিন্তু আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট যদি হ্যাকড হয়ে যায় বা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে যায়, তখন সবকিছুই হারিয়ে যাবে।
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হলে বা নষ্ট হলেও যাতে সব তথ্য আগের মতো থাকে সে ব্যবস্থাও আছে। এজন্য সব তথ্যের ব্যাকআপ ফেসবুকে রাখতে পারেন। ফেসবুকে ঢুকে (লগ-ইন) করে ওপরে ডান পাশের Account থেকে Account Settings-এ ক্লিক করুন। এখন সবার নিচে Download Your Information-এর ডান পাশের learn more-এ ক্লিক করুন। নতুন পৃষ্ঠা এলে Download-এ ক্লিক করুন। এখন আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একটি ব্যাকআপ প্রোফাইল তৈরি হতে থাকবে। ব্যাকআপ প্রোফাইল তৈরি হয়ে গেলে আপনার ই-মেইল ঠিকানায় একটি মেইল যাবে। তারপর আবার Account থেকে Account Settings-এ ক্লিক করে Download Your Information-এর ডান পাশের learn more-এ ক্লিক করুন। Verify Password-এ Password দিয়ে Continue-তে ক্লিক করুন। এখন Download Now-এ ক্লিক করলে ফেসবুকের ব্যাকআপ প্রোফাইলটি ডাউনলোড হয়ে যাবে। Download Now-এর নিচে আপনার ফেসবুকের ব্যাকআপ প্রোফাইলটি কত মেমোরির সেটিও দেখা যাবে। ডাউনলোড সম্পন্ন হওয়ার পর জিপ ফাইলটি আনজিপ করুন। এখন index ফাইলটি খুললে আপনি আপনার ফেসবুকের পুরো প্রোফাইল দেখতে পারবেন। —মো. আমিনুর রহমান

মানবাধিকার লংঘনকারী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ

মানবাধিকার লংঘনকারী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ

বশীর আহমেদ
মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট প্রকাশের পর এখন বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ চিত্র নিয়ে সর্বত্রই আলোচনা হচ্ছে। মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্টে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা, রিমান্ডের নামে নির্যাতন, বিচার বিভাগ দলীয়করণ ও ন্যায়বিচার না পাওয়া, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, রাজনৈতিক সহিংসতা, সীমান্তে হত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তারিত বিবরণ উদাহরণসহ তুলে ধরা হয়েছে। তবে মার্কিন এই রিপোর্ট সম্পর্কে বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্টটি হতাশাজনক। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও কলামিস্ট বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, বাংলাদেশ এখন মানবাধিকার হত্যাকারী রাষ্ট্র। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, যাদের দায়িত্ব মানবাধিকার রক্ষা করা তারা এখন ইচ্ছেমত মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান মিঞা তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, বাংলাদেশে এখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলা হয় :
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েই চলেছে। আটক অবস্থায় মৃত্যু, নির্যাতন, অযৌক্তিকভাবে গ্রেফতার এবং ডিটেনশনের জন্য এই নিরাপত্তা বাহিনী দায়ী। বিচারবহির্ভূত এসব হত্যা এবং বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত র্যাবের ব্যাপারে সব ধরনের তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এটা গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্য এ ধরনের অপরাধ করছে এই নিশ্চয়তা নিয়ে যে, তাদের কোনো শাস্তি হবে না। এতে বিচারের আগেই কারাগারে মৃত্যুঝুঁকির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ নাগরিক অধিকারকে উপেক্ষা করেছে। বিচার বিভাগকে অব্যাহতভাবে রাজনীতিকীকরণ করায় বিচারব্যবস্থায় বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর ফলে বিশেষ করে বিরোধী দলের জন্য এখন ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ
সীমিত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার গণমাধ্যম এবং জনগণের বাকস্বাধীনতাকে সীমিত করে ফেলেছে। গণমাধ্যমগুলো সেলফ সেন্সরশিপ করতে বাধ্য হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে সাংবাদিকদের। সরকার সভা-সমাবেশের অধিকারকে সীমিত করেছে এবং অব্যাহত রয়েছে রাজনৈতিক সহিংসতা। এটা এখন একটি বড় সমস্যা।
সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি অব্যাহত গতিতে চলছে এবং দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা শাস্তির বাইরে থেকে যাচ্ছে। নারীর প্রতি বৈষম্য এবং নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা একটি ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে বাংলাদেশে। নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হচ্ছে নারীরা। মানব পাচার এখনও বড় সমস্যা।
মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট সম্পর্কে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান আমার দেশকে বলেন, যেনতেনভাবে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এখানে অনেক পুরনো তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। উদাহরণসহ এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, এখানে নতুন কিছু নেই। বিষয়গুলো আমাদের জানা।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনা বন্ধে কমিশন এখন কী পদক্ষেপ নেবে—এ প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধ করতে আমরা যে কৌশল প্রণয়ন করছি সেখানে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হবে।
বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর মার্কিন রিপোর্ট ও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার দেশকে বলেন, মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্টে যেসব তথ্য এসেছে, তার সত্যতা আছে। তবে তাদের এই রিপোর্ট নিয়ে আমাদের হৈচৈ করার কিছু নেই। আমরাই ভালো জানি আমাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে। আমরাই এর ভুক্তভোগী। মার্কিন রিপোর্টে যেসব বিষয় এসেছে, সেসব ব্যাপারে আমরা বলে বলে হয়রান হয়ে গেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন মানবাধিকার রিপোর্ট দিচ্ছে; কিন্তু তাদের সমর্থন নিয়েই তো সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। তিনি বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সর্বোচ্চ পর্যায়। এর বাইরে আরও ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। কথায় কথায় গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন। আপনার সম্পাদককেও তো বারবার রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করেছে। বিচারকরাও এখন রিমান্ডের অনুমতি দিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, এখন সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হয় না। হরতাল করতে বাধা দেয়া হয়। হরতাল ভালো না খারাপ তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে; কিন্তু হরতাল একটি গণতান্ত্রিক অধিকার।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার দেশকে বলেন, মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, তার সবই ঠিক। এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তো আমরা এখন পত্রিকার পাতায় প্রতিনিয়ত দেখতে পাই। বিচারবহির্ভূত হত্যা এখন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। এখানে যার যা খুশি তা-ই করছে। সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে বলে আমার মনে হয় না। বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো, যাদের হাতে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব তাদের হাতেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। কোনো সভ্য সমাজে এটা চলতে পারে না। মানবাধিকার রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার যদি পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। মানবাধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা ইতিবাচক। বিরোধী দলের উচিত সংসদে মানবাধিকার ইস্যুতে সোচ্চার হওয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান মিঞা তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্টে তারই প্রতিফলন হয়েছে। আমি মনে করি, মার্কিন এই রিপোর্টটি তথ্যভিত্তিক। বিচারবহির্ভূত হত্যা, ন্যায়বিচার না পাওয়া, দুর্নীতি, রাজনৈতিক সহিংসতাসহ যেসব বিষয় রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে তা সঠিক। তিনি বলেন, এখন সরকার যদি বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হয় তাহলেই কেবল পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে পারে।